মেসোর শিলিগুড়িতে আলিপুরদুয়ারের বাড়ীতে বিয়ে হবে, পৈতৃক বাড়ী বলে কথা। রিনিদিদি ছোটবেলা থেকে আমার মা আর বাবার খুব প্রিয় ছিল তাই ওর বিয়ে আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মাসিরা বলেই দিয়েছিলেন যে ৫/৬দিন আগে থেকেই যেন আমরা চলে আসি। ঘরের কোন চিন্তা নেই। রিনির বিয়ে মানে মায়ের মেয়েরই বিয়ে তাই যেন মা হেলাফেলা না করেন ব্যাপারটা। যথাসময়ে আমরা চলে গেলাম রিনিদিদির বাড়ী। রিনি তো আমাকে দেখে খুব খুশি।
ও আমাকে দেখেই জড়িয়ে ধরে বলল, ‘উফ পায়েল তোকে দেখে আমি যে কি খুশি হয়েছি। আমি বিশ্বাসই করতে পারি নি তুই এতো তাড়াতাড়ি চলে আসবি। জানিস তো সবাই কাজে ব্যস্ত, দুদণ্ড যে কারো সাথে মন খুলে কথা বলবো, কেউ নেই। চল চল আমার ঘরে চল। কি কি বিয়ের জন্য কিনেছে মা বাবা দেখাবো সব।‘
মা আর বাবা যথারীতি কাজে লেগে গেলেন। আত্মীয়দের মধ্যে এই একটা বাড়ী যেখানে আমরা নিজেদের মত চলতে পারি। ওখানে এটা করিস না ওটা করিস না বলবার কেউ নেই।
আমি রিনির সাথে যেতে যেতে বললাম, ‘এতো তাড়াতাড়ি বলছিস? কলেজে বাবাকে যে কি মিথ্যে বলতে হয়েছে এর জন্য সে আমি জানি। বাবা যখন প্রিন্সিপালের সাথে কথা বলছিলেন বাবার মিথ্যে বলা দেখে আমি তো অবাক। কি সুন্দরভাবে কোন বহিঃপ্রকাশ না রেখেই বাবা অনর্গল মিথ্যে কথা বলে গেলেন। ছুটি মিলে যাবার পর যখন কলেজের বাইরে বেড়িয়ে এলাম বাবাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম তুমি ওনার সামনে কি সুন্দরভাবে মিথ্যে কথাগুলো বলে গেলে। ওয়াহ। বাবা কি বলেছিলেন জানিস, বলেছিলেন আমার রিনির বিয়ে আর আমি মিথ্যে বলবো না ওর জন্য। যত পাপই হোক না কেন।‘
রিনি আমার হাত ধরে ওর ঘরের দিকে নিয়ে যেতে যেতে বলল, ‘আরে মেসোর কথাই আলাদা। আমার মন বলছিল মেসো আর মাসি ঠিক অনেক আগেই এসে পরবে। মন যে ভুল বলে নি তোরা তার প্রমান।‘
দিদির ঘরে ঢুকলাম। ঘর মানে এখন এটা দিদির জন্য রাখা হয়েছে। নাহলে এমনিতে ফাঁকাই পরা থাকে। শুধু এটা কেন বাকি ঘরও ফাঁকাই থাকে। কেউ থাকে না এখানে শুধু একটা কেয়ারটেকার ছাড়া। মেসোর ইচ্ছে নেই এটা বিক্রি করার, কারন মেসো মাঝে মাঝে এসে সবাইকে নিয়ে ছুটি কাটিয়ে যান। আমাদেরও অনেকবার বলেছিলেন মেসো গিয়ে যেন কাটিয়ে আসি। বাবা বা মা কেন যান নি তা জানি না।
আমি রিনির ঘরে ঢুকতে ঢুকতে বললাম, ‘আরে আমি যে চলে এলাম বাবা মা কোথায় রয়ে গেলেন? দেখলাম না তো ওনাদেরকে।‘
রিনি আমাকে ঘরে ঢুকিয়ে বলল, ‘তোকে এখন আর বাবা মার কথা চিন্তা করতে হবে না। তুই এসেছিস তুই এখন আমার সম্পত্তি। তোকে দেখভাল করার ব্যাপার আমার। তুই এখন পায়ের উপর পা তুলে বস।‘
আমি বিছানায় বসতে বসতে বললাম, ‘তুই আমাকে এখন দেখভাল করবি? ভাট। তোকে তো আমাকে দেখতে হবে। আর দুদিন পরে বিয়ে। ও বলে কিনা আমার দেখভাল করবে।‘
দুজনে হাসছি নিজেদের কথায়। রিনি বলল, ‘দাঁড়া তোকে দেখাই কি কি কেনা হয়েছে আমার বিয়ের জন্য। গয়নাগুলো পরে দেখিস, এখানে রাখেন নি মা। লকারে আছে। বিকেলে দেখলেই হবে। এখন শাড়ি, ব্লাউস এইগুলো দেখ।‘ বলে রিনি আলমারি খুলে সব বার করে আনল একেক করে। সে কত ধরনের শাড়ি, বাপরে বাপ। একেকটার দামী মনে হয় অনেক হবে। বেনারসি, বালুচুরি, জামদানী, সম্বলপুরী কটকি সিল্ক কি নেই। একেকটা করে শাড়ীর ভাঁজ ভাঙছে আর নিজের গায়ে মেলে দেখাচ্ছে আমাকে। বলছে, ‘এই দেখ কেমন লাগছে বলতো?’
আমার তো আবার ওই শাড়ি মারি পরার অভ্যেস নেই আর খুব একটা পরিও না। যা পরি গোটা কতক সিল্কের শাড়ি আছে তাই। আর খুব একটা নেশাও নেই আমার শাড়ীর প্রতি। কি যে ওতবড় একটা কাপরকে কায়দা করে পরতে হয়, পরার সময় এমন এলার্জি লাগে যে কি বলবো। কিন্তু রিনিকে তো আর এইসব বলা যাবে না। ভাববে আমার নাক উঁচু। তাই খুব একটা না বুঝলেও মাথা নাড়াতে লাগলাম ভালো ভালো বলে।
সব কিছু দেখানোর পর চটি দেখলাম। এটা আমার পছন্দের। খুব ভালো লাগছিল রিনির ফর্সা পায়ে। আবার পায়ের পাতায় আলতা লাগিয়েছে। দারুন খোলতাই হয়েছে দেখতে। আনন্দে বললাম, ‘দিদি কি দারুন লাগছে তোর পাটা। জামাইবাবু তো একদম চেটে পুটে খাবে তোর পা।‘
রিনি আবার সব গুছিয়ে আলমারিতে তুলতে তুলতে বলল, ‘আমার পা চেটে খাবে কেন? আমার দু পায়ের মাঝখানটা কি করতে আছে?’
আমি লজ্জা পেলাম ওর সোজাসুজি এই কথায়। আমি মাথা নিচু করে বললাম, ‘যাহ্*, তোর লজ্জা করলো না এইভাবে বলতে?’
রিনি কাছে এসে আমার গাল টিপে বলল, ‘ও বাবা কি লজ্জা আমার নেকুর। যেন কোনদিন চাটাবে না ওর বরকে দিয়ে। তখন দেখব কি করিস আর কত লজ্জা পাস। ও হ্যাঁ, লোমগুলো কেটেছিস?’
সেই এক কথা রিনির। আমি বললাম, ‘আরে তোকে তো বলেছি যেদিন ভালো লাগবে না সেদিন কেটে দেবো। এখন কেন চিন্তা করছিস?’
রিনি সব গুছিয়ে চাবি দিয়ে আলমারি বন্ধ করে বিছানায় বসে বলল, ‘তোর আর কি? কেউ আবার ওই জঙ্গলে হাত দেবে তার জন্যই তো তুই কাটছিস না। সত্যি কিনা বল?’
আমি বললাম, ‘যাতো, আমি জানি না।‘
[post_ads]
রিনি ফিসফিস করে বলল, ‘তুই আর আমি তো এইঘরে থাকবো, বল তো আমি শেভ করে দিতে পারি। আমার কাছে ইলেকট্রিক রেজার আছে। করবি?’
আমি আপত্তি জানিয়ে বললাম, ‘কোন দরকার নেই। তোর বিয়ে তার চিন্তা কর এখন।‘
আমরা গল্প করতে লাগলাম। এই করে একদিন বিয়ের দিন এসে গেল। সকালবেলা থেকে তোড়জোড় শুরু বিয়ের। দিদি উপোষ করে আছে। শ্বশুরবাড়ি থেকে গায়ে হলুদ আসবে, তত্ত্ব আসবে। আমরা সময় গুনছি কখন আসবে ওইসব। আমি এখন দিদির কাছে নেই। ঘর সাজাচ্ছি, দিদির শ্বশুরবাড়ি থেকে লোকেরা আসবে, তারা থাকবে কোথায়, বসবে কোথায় আমরা সব এইগুলো নিয়ে ব্যস্ত।
একবার ছুটে দিদির কাছে গেলাম। দিদি একটা তাঁতের শাড়ি পরে বসে আছে, গায়ে লাল ব্লাউস। মুখটা উপোষ করার জন্য কেমন যেন শুকিয়ে আছে। দিদি আমাকে দেখে একটু হাসল, বলল, ‘তোরা সব কোথায় রে? সব দেখছি কাজে ভিড়ে আছিস। আমার সাথে কেউ তো একটু কথা বলবে?’
আমি হেসে উত্তর দিলাম, ‘আরে তোর সাথে সারা জীবন যেন কেউ কথা বলে তার জন্যই তো এতো ব্যস্ততা। তুই কি ভাবছিস আমরা সব মজা করছি?’
রিনি মুখ ঝামটা দিয়ে বলল, ‘রাখ তো তোদের ব্যস্ততা। সব জানি। আমাকে ফাঁকি দেবার জন্য তোরা আসছিস না।‘
আমি আরও একটু মজা করলাম, ‘তুই বলতো তোকে একা রেখেছি কেন আমরা?’
রিনি জিজ্ঞেস করলো, ‘কেন?’
আমি বললাম, ‘রাতে বরের সাথে কি কি করবি সেইগুলো একা বসে ভাবতে।‘ বলে আমি দৌড়ে আবার বাইরে চলে গেলাম।
রিনি ডাকতে থাকল, ‘পায়েল, পায়েল। দাঁড়া তোর মজা দেখাচ্ছি।‘
কিন্তু আমাকে আর পায় কে। আমি তো দৌড়ে বেড়িয়ে গেছি। যেতে যেতে শুনলাম উলু ধ্বনি। তারমানে তত্ত্ব এসে গেছে। আমি আবার দৌড়ে রিনির কাছে ফিরে এলাম, বললাম, ‘শোন, তত্ত্ব বোধহয় এসে গেছে। তুই একা বসে থাক আমি দেখে আসছি কি কি এলো। গায়ে হলুদ দিতে হবে না?’
আবার চলে গেলাম বাইরে। রিনির গলা শুনতে পেলাম, ‘ও আসবি না তো? দেখবি তোর বিয়েতে আমি কি করি।‘
আমি হাসতে হাসতে গায়ে হলুদের তত্ত্বের জন্য চলে গেলাম। এখন চিৎকার করছে বিয়েতে সব ঠিক হয়ে যাবে। সব ভিড় করে দাঁড়িয়ে আছে। কেউ উলু দিচ্ছে, কেউ বা শাঁখ বাজাচ্ছে। চিৎকার চেঁচামেচি চারিদিকে। উঁকি মেরে দেখলাম কে কে এসেছে। মাকে দেখালাম হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছেন। মায়ের কাছে যেতেই মা বললেন, ‘কিরে কোথায় ছিলি? সারাক্ষন দেখা নেই তোর।‘
আমি বললাম, ‘আরে আমি তো দিদির কাছে আছি তখন থেকে। ছাড়ে কি আর?’
মা বললেন, ‘হুম। এগুলো সব রাখতে হবে না? নে নে সব হাতে হাতে নে।‘
দেখি এক সুন্দরী ভদ্রমহিলা দাঁড়িয়ে আছেন হাতে তত্ত্বের থালা নিয়ে। আমি হাত বাড়িয়ে থালাটা নিতে যেতেই মহিলাটি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালেন। মাসি এটা লক্ষ্য করে বললেন, ‘আরে এ হচ্ছে পায়েল, রিনির মাসির মেয়ে। রিনির গলার বন্ধু। এ ছাড়া ওর আর কোন বন্ধু নেই।‘
মহিলাটি আমার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হাসলেন। দারুন হাসি ওনার। উনি বললেন, ‘আর আমি কে জানো? আমি হচ্ছি তোমার দিদির ননদ, উনি হচ্ছেন ননদাই।‘ যে ভদ্রলোকের দিকে দেখালেন সেই লোকটিও খুব অমায়িক। সবার সাথে হেসে কথা বলছেন। আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘তুমি খুব সুন্দর দেখতে কিন্তু।‘
আমি চাপা স্বরে বললাম, ‘থ্যাঙ্ক ইউ।‘
দিদির ভাবি ননদ আমাকে আরেকটা ছেলের দিকে ইশারা করে বললেন, ‘আর ও হচ্ছে অরিন্দম। তোমার দিদির এক দূর সম্পর্কের দেওর। এই নাও এইগুলো ধরো।‘
আমি থালা নিতে নিতে লক্ষ্য করলাম অরিন্দম মানে দিদির ভাবি দেওর আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে মুখে হাসি এনে। আমি হাসি ফেরত দিয়ে থালা নিয়ে আর সবাই যে দিকে যাচ্ছে সেইদিকে চলে গেলাম। ছেলেটার হাসি মাখা মুখ চোখের সামনে ভেসে রইল। ঘরের ভিতর এসে মনে হোল ছেলেটা বেশ স্মার্ট। গায়ে একটা শেরওয়ানী পরা, চুলগুলো উল্টো করে আঁচড়ানো, ঠোঁটের উপর সুন্দর সরু একটা গোঁফ, মুখের শ্রী বৃদ্ধি করেছে যেটা। চোখগুলো যেন কথা বলছে। মনের মধ্যে লেগে রইল ছেলেটা।
বিয়ের সময় ছেলেটাকে আবার ভালো করে দেখলাম। দেখলাম মানে হঠাৎ করে ও সামনে এসে গেল। আমি সেজেগুজে এধার ওধার দৌড়াদৌড়ি করছি। দেখি সামনে ও। এবারে ভালো করে নজর দিলাম। পেটানো চেহারা, দেখেই মনে হয় রেগুলার ব্যায়াম করে। ফর্সা গায়ের রঙ। নাকটা আগে দেখি নি। এখন দেখলাম। টিকালো নাক। মুখের সাথে দারুন মানিয়েছে।
সামনা সামনি পরে যাওয়াতে বাধ্য হয়েই বললাম, ‘কি হোল একা দাঁড়িয়ে? চা বা কফি কিছু নিয়েছেন?’
অরিন্দম ঠোঁট উল্টে জবাব দিলো, ‘ছেলের বাড়ীর থেকে এসেছি। কেউ কি আর পাত্তা দেয়? নাহ্*, জোটে নি ভাগ্যে।‘
আমি কৃত্রিমতা গলায় ফুটিয়ে বললাম, ‘ওমা সেকি কথা। তাই জন্য মুখ এতো শুকনো লাগছে। চলুন দেখি কোথায় পাওয়া যায় কফি। ছেলের বাড়ীর লোক বলে কথা। আবার কি না কি বদনাম দিয়ে দেবেন।‘
অরিন্দম আমার সাথে যেতে যেতে বলল, ‘সেতো দেবই। বদনাম কি আর করবো না?’
আমি অবাক হবার ভান করে বললাম, ‘বাহরে, এইযে কফি খাওয়াতে নিয়ে যাচ্ছি যে?’
ও হেসে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘শুধু কফি খাওয়ালে চলবে? এই যে তখন থেকে একলা একলা ঘুরছি কেউ নেই একটু গল্প করার মত। আর কাঁহাতক একলা একলা ঘোরা যায়?’
আমার মনে হোল অরিন্দম ঠিক কথা বলেছে। আমিও তো ফালতু ঘুরে বেড়াচ্ছি। তার থেকে ওর সাথেই কথা বলে সময় কাটাই না কেন। দিদিকে পার্লার থেকে এসে সাজাচ্ছে। জানি না কতক্ষনে শেষ হবে শৃঙ্গার পর্ব। তারথেকে এই ভালো। ওর সাথে কিছু সময় কাটানো যাবে।
আমি ওর দিকে তাকিয়ে রীতিমতো চোখে যৌনতা এনে বললাম, ‘যদি আমার সাথে কথা বললে ভালো লাগে তো আমি এখন ফ্রি।‘
এ কথায় ও কথায় ওর সবকিছু জেনে নিলাম। অরিন্দম এরোনোটিক ইঞ্জিনিয়ার। বাড়ীর এক ছেলে। রিনির বরের অনেক দূর সম্পর্কের আত্মীয়। ছুটিতে এসেছিল। কিন্তু কল আসাতে ছুটি তাড়াতাড়ি কান্সেল করে কালই সকালে চলে যাবে। বাগডোগরা থেকে ফ্লাইট ধরে দিল্লী। অরিন্দমের হাইট প্রায় ৬ ফিট। পাইলট একেই মানায়।
[post_ads_2]
আমরা বেশ কিছুক্ষন ধরে গল্প করছি এমন সময় মাসি এসে ডাক দিলেন, ‘এই পায়েল, তুই কোথায়? তোকে রিনি ডাকছে।‘
আমি ফিসফিস করে বললাম, ‘আপনি এখন একটু একা ঘুরুন। আমি আসছি।‘
অরিন্দম দুম করে আমার হাত ধরে বলল, ‘আসবেন তো?’
আমি আস্তে করে আমার হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে বললাম, ‘শিওর। আপনি থাকবেন তো?’
অরিন্দম হাতটা তুলে বাই করার মত বলল, ‘এখন আমার এইখানে আপনি ছাড়া আর কে পরিচিত আছে। আমি আছি এইখানে।‘
আমি এগিয়ে গেলাম। হারিয়ে যাবার আগে পিছন ফিরে দেখলাম ও এক দৃষ্টিতে আমার যাবার পথের দিকে চেয়ে রয়েছে। কষ্ট হচ্ছিল আমার ওকে একা ছেড়ে আসার।
দিদির কাছে এসে দেখলাম দিদি তৈরি। এতো সুন্দর রিনিদিদিকে আগে কখনো দেখি নি। আমি হা করে তাকিয়ে রইলাম। রিনির আমার দিকে চোখ পরাতে হেসে বলল, ‘কিরে জাম্বুবানের মত হা করে কি দেখছিস? কোনদিন দেখিস নি নাকি?’
আমি হা মুখেই বললাম, ‘দেখেছি তো আগে। কিন্তু এতো সুন্দর তোকে আগে কখনো দেখি নি। কি দারুন তোকে দেখতে লাগছে তুই জানিস না দিদি।‘
দিদি আমার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘তবু তোর ওই চাঁদপনা মুখটার থেকে ভালো নয়।‘
আমি দিদির গলা জড়িয়ে বললাম, ‘তুই আবার একটু বেশি বাড়িয়ে বলছিস। দারুন লাগছে কিন্তু তোকে।‘
রিনি জিজ্ঞেস করলো, ‘কোথায় ছিলি বলতো? অনেকক্ষণ দেখা নেই তোর?’
আমি অরিন্দমের কথা চেপে গিয়ে বললাম, ‘এইতো প্যান্ডেলে দেখভাল করছিলাম। ভালোই সাজিয়েছে প্যান্ডেলটা।‘
রিনি বলল, ‘ইসস, আমার দেখা হোল না।‘
আমি দিদিকে ছেড়ে দিয়ে বললাম, ‘দেখবি দেখবি, পালাচ্ছে না বাবা প্যান্ডেলটা।‘
বিয়ের পর খেতে যখন বসেছি তখন দেখি আমার উল্টো দিকে আমার সামনে অরিন্দম বসে আছে। আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে,। ইচ্ছে হচ্ছিল ও আমার পাশে এসে বসুক। কিন্তু সবার সামনে তো আর সেটা বলা যায় না। মাঝে একটু কথা হয়েছে ঠিকই কিন্তু আমি বেশি সময় দিদির কাছে ছিলাম। ওত ওর দিকে নজর দেওয়া হয় নি। খেতে খেতেই আমাদের চোখে চোখে অনেক কথা হোল। ও হাসে আমিও হাসি। আবার চারিপাশ দেখে নিই কেউ দেখছে কিনা।
একসাথে এসে সবাই বসলাম একটা ঘরে। গান বাজনার আসর বসেছে। যে যার মত গান গাইছে। কেউ সুরে কেউ বা বেসুরে। অরিন্দমকে সবাই ধরল গান করতে। ও তো কিছুতেই গান করবে না। আমার দিকে চোখ পরাতে আমি চোখে ইশারা করলাম গান করতে। অরিন্দম গলা ঝেরে গান ধরল মান্না দের গান ‘দীপ ছিল শিখা ছিল’। খুব ভালো গলা ওর। গানটা শেশ হতেই আমার হাতে আমারই অজান্তে তালি বেজে উঠলো। মনে পরতে আমি মুখ নিচু করে দিলাম,
ইসস কি লজ্জা। সবাই কি ভাবছে কে জানে।
একটা সময় আমার হাঁটুতে একটা হাতের ছোঁওয়া পেয়ে দেখলাম অরিন্দম পাশে এসে বসেছে আর ওর একটা হাত আমার হাঁটুর উপর। ভালো লাগছিল ওর স্পর্শ। অন্যদিকে তাকিয়ে দেখলাম কেউ ব্যাপারটা লক্ষ্য করছে কিনা। যে যার নিজেদের নিয়ে মত্ত তখন। গান শেষ। চুটকির আসর বসেছে। শ্লীল, অশ্লীল সব ধরনের চুটকি বলা হচ্ছে। মেয়েরা খুব বেশি। আমার কান, গাল সব লাল হয়ে উঠেছে। শুনে নয়। অরিন্দম পাশে বসে আছে তাই।
একসময় অরিন্দম বলল, ‘আপনি বলবেন না?’
আমি এক আঙ্গুলে শাড়ীর আঁচল জড়াতে জড়াতে বললাম, ‘ধ্যাত অসভ্য।‘
অরিন্দম হা হা করে হেসে উঠলো। কি সুন্দর ওর হাসি। একসময় অশান্ত পরিবেশ শান্ত হয়ে আস্তে লাগলো যত রাত বাড়তে লাগলো। দেখলাম গুটি গুটি একেক জন করে সবাই শুয়ে পরেছে। আমি অরিন্দমকে বললাম, ‘আপনি একটু ঘুমিয়ে নিন। সকালে তো আবার বেড়তে হবে।‘
অরিন্দম আমার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘না বাবা, সকালে যদি উঠতে না পারি?’
আমি ওর চোখে চোখ রেখে বললাম, ‘আমি তো আছি। আমি উঠিয়ে দেবো। আপনি নিশ্চিন্তে ঘুমান।‘
অরিন্দম জবাব দিল, ‘আমি কি পাষণ্ড নাকি? আমি ঘুমাব আর আপনি জেগে থাকবেন। তাই হয় নাকি? আমি এক কাজ করছি। আপনি ততক্ষন একটু গড়িয়ে
নিন, আমি ছাদের থেকে একটা সিগারেট খেয়ে আসি।‘
আমি বললাম, ‘ধুর, আমারও ঘুম আসছে না। চলুন। আমিও যাই আপনার সাথে। আপনার সিগারেট খাওয়াও হবে, আমার সময় কাটানোও হবে।‘
অরিন্দম উঠতে উঠতে বলল, ‘সেই ভাল, চলুন যাওয়া যাক।‘
সকলের ঘুমের চোখকে ফাঁকি দিয়ে আমরা বেড়িয়ে এলাম ঘর থেকে, পা টিপে টিপে ছাদে চলে গেলাম।
মাসিদের ছাদ পেল্লায় বড়। সামনে প্যান্ডেলের লাইটগুলো জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। আমাদের এই ছাদেও ওর রেশ এসে পরেছে। দুজনে পাশাপাশি হাঁটতে লাগলাম। অরিন্দম হাঁটতে হাঁটতে বলল, ‘বেশ লাগছে না? ছাদটা কিন্তু খুব বড়। আপনার মাসিরা খুব বড়োলোক না?’
আমি সেভাবে তো আর বলতে পারবো না তবে রিনিদিদিদের লাইফ স্টাইল বেশ জাঁকজমকের। মেসো ভালো জায়গায় চাকরি করে, ভালো হবে নাতো কি? আমি শুধু আওয়াজ করলাম, ‘হুম।‘
হাঁটতে হাঁটতে একদম একধারের কিনারায় চলে এলাম। নিচে ঝুঁকে দেখলাম। এইদিকটা বাড়ীর সামনের দিক। গেটের আলো তখনো জ্বলে আছে। অরিন্দমের দিকে তির্যক দৃষ্টি দিয়ে দেখলাম। নিচের থেকে লাইট পরে ওর মুখে কেমন একটা আলো আঁধারী ভাব এনেছে। ভালোই লাগছে। তাহলে আমার মুখটাও তাই লাগছে। কে জানে ভালো লাগছে না খারাপ। তবে এখানে দাঁড়ালে চোখে বড় লাইট পড়ছে। বললাম, ‘চলুন, ওইদিকে যাই। এখানে বড় আলো।‘
অরিন্দম হেসে উঠলো, বলল, ‘কেন অন্ধকারকে খুব ভালবাসেন নাকি?’
আমি হাঁটতে শুরু করলাম ওকে ছাড়াই। আস্তে আস্তে বটে। বললাম, ‘তা কেন? অন্ধকারকে সবাই ভয় পায়। শুধু আমি না। এখানে আলোটা খুব চোখে লাগছেবলে চলে এলাম। আপনার যদি ভালো লাগে তাহলে দাঁড়ান না।‘
পিছন থেকে ফোঁস করে একটা আওয়াজ এলো। একটু ভয়েই পিছন ফিরে দেখালাম ও একটা দেশলাই জ্বেলেছে সিগারেট ধরাবে বলে। দেখতে থাকলাম, বেশ স্টাইলে সিগারেটটা ধরালো। তারপর একমুখ ধোঁওয়া ছেড়ে বলল, ‘যদি আলাদাই থাকতে হবে তাহলে দুজনে মিলে এলাম কেন ওপরে?’
আমি অন্ধকারের দিকে চলে গিয়ে ছাদের কার্নিশে পিছন ঠ্যাসান দিয়ে বললাম, ‘আপনাকে চালাক ভেবেছিলাম, কিন্তু আপনি তো একটা বোকা দেখছি। আমি চলে এলাম লাইটের জন্য। আর আপনার লাইট ভালো লাগে। তাহলে আলাদা হবো নাতো কি?’
অরিন্দম এসে পাশে গা ঘেঁসে দাঁড়ালো, বলল, ‘আচ্ছা আমি বোকা বোঝা গেল তাহলে। বেশ বুদ্ধি তো আপনার। অথচ একটুও গর্ব নেই আপনার মধ্যে।‘
ওর বলার ধরন দেখে আমি হেসে ফেললাম। ও আমার হাসি দেখে বলল, ‘হাসি নয়। অ্যাই অ্যাম সিরিয়াস। সত্যি বলছি।‘
আমি বললাম, ‘ঠিক আছে মশাই আমরা এখানে নিশ্চয়ই ঝগড়া করতে আসি নি। আসুন দু চারটে কথা বলা যাক। আমরা তো তাই করতে এসেছি। টাইম পাশ করতে।‘
অরিন্দম দূরে তাকিয়ে বলল, ‘দেখুন পাহারের গায়ে বাতিগুলো। টিপটিপ করে কেমন জ্বলছে। ওই দেখুন আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখুন, অন্ধকার মিশমিশে কালো আকাশে চাঁদ কেমন আলো ছড়িয়ে নিজের রাজত্ব পেতে বসেছে।‘
আমি একটু কৌতুকের গলায় বললাম, ‘এই অন্ধকারে কাব্য বেরোচ্ছে নাকি মন থেকে?’
ততক্ষনে অরিন্দম গুনগুন করে গান শুরু করেছে, “ও চাঁদ সামলে রাখো জ্যোৎস্নাকে, কারো নজর লাগতে পারে……’
গান শেশ হবার পর কিছুক্ষন মনে হোল অরিন্দমের গানের রেশ পাহারের গায়ে প্রতিধ্বনি হচ্ছে। খুব ভালো লাগছিল মুহূর্তটাকে। কিছুক্ষন পর আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘কার নজর লাগবে শুনি?’
অরিন্দম আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল, ‘চাঁদের কার নজর লাগবে জানি না, কিন্তু’ গলাটা প্রায় ফিসফিস করে বলল, ‘আমার নজর লেগে গেছে এক অনন্য সুন্দরীর উপর।‘
আমি জানি ও কি বলতে চাইছে, তবু না বুঝে বললাম, ‘এই অন্ধকারে আবার কোন সুন্দরীকে খুঁজে পেলেন আপনি?’
অরিন্দমের দৃষ্টি আমার কাছ থেকে সরে যায় নি। ও আমার আরও কাছে এসে কাঁধে হাত রেখে বলল, ‘এই সুন্দরীর। এতে আমি বিদ্ধ হয়েছি।‘
আমি কাঁধের থেকে হাত সরিয়ে নেবার জন্য হাত তুলেছি আর বলেছি, ‘আরে বাপরে। আমার মধ্যে আবার সুন্দরের কি দেখলেন শুনি।‘
যেন কিছু ভেঙ্গে পড়লো এমন আওয়াজ কানে এলো। ওমনি চারিদিক ঘুটঘুটে অন্ধকারে ছেয়ে গেল। যেন রাজ্যের ভয় আমার শরীর ঘিরে ধরল। আমি হাত ছাড়িয়ে নেবার বদলে অরিন্দমকে প্রানপনে জড়িয়ে ধরলাম, একদম জাপটে। আমার তখন কোন খেয়াল নেই আমি কি করছি। আমার সারা শরীর থরথর করে কাঁপছে। কি বিকট আওয়াজ! এখনো কানে বাজছে ওই আওয়াজের রেশ। অরিন্দম ওর এক হাত দিয়ে আমার পিঠে বেড় দিয়ে রয়েছে আর আরেক হাত দিয়ে আমার মাথায় আস্তে আস্তে ঠুকে যাচ্ছে।
আমার শরীরের থরথরানি একটু কম হলে আমি আস্তে করে নিজেকে ছাড়িয়ে নিলাম। ওর দিকে তাকাতে আমার লজ্জা করছে। কি ভীতু আমি, কি না কি একটা আওয়াজ হোল ব্যস ওকে জাপটে ধরলাম আমি। এখন কি করি?
[post_ads_2]
অরিন্দম ফিসফিস করে আমার কানে বলল, ‘এখন ভয়টা গেছে?’
আমি অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে বললাম, ‘কি আওয়াজ হোল বলুন তো?’
ও উত্তর দিলো, ‘ছেড়ে দিন। যেটা হয়ে গেছে ওটা নিয়ে ভেবে লাভ নেই। আমি আপনার কাছে একটা কিছু চাইতে পারি? এই বিশেষ মুহূর্তটাকে ভুলে যেতে দিতে মন করছে না যে।‘
আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘কি জিনিস?’
অরিন্দম বলল, ‘আপনার সুন্দর ঠোঁটে একটা চুমু খেতে চাই।‘
আমার কানে যেন কেউ গরম জল ঢেলে দিলো ওর অভিব্যক্তিই ছিল ওই রকম। আমি বলে উঠলাম, ‘এমা তা হয় নাকি?’
অরিন্দম বলল, ‘কেন হয় না পায়েল? এই রাতে শুধু তুমি আর আমি। এই রাতকে সাক্ষি রেখে আমি এখান থেকে অমূল্য কিছু স্মৃতি নিয়ে যেতে চাই যে। আমার মন বলছে তাই।‘
অরিন্দম আমার গালদুটো দুহাতে ধরে আমার মুখ ওর দিকে করে আমার দিকে তাকিয়ে রইল। আমি চোখে চোখ রাখতে গিয়েও পারছি না যে। আমি দুর্বল হয়ে যাচ্ছি, মনে হচ্ছে ওই নজর আমাকে সম্মোহিত করে দিয়েছে। আমি কোনরকমে ওর চোখে চোখ রেখে বললাম, ‘এটা পাপ হবে না?’
অরিন্দম বলল, এই প্রথম অরিন্দম আমাকে তুমি সম্বোধন করলো, ‘তুমি মেনে নিলে কোন পাপ নেই। আর পাপের আমরা করছিটা কি। দুজন দুজনকে চুমু খাওয়া যদি পাপ হয় তাহলে তোমার সাথে এই ধরনের পাপ আমি অনেকবার করতে রাজি আছি।‘
আমিও অরিন্দমকে তুমি বলে ফেললাম জানি না মন কেন সায় দিলো, বললাম, ‘কিন্তু সবার থেকে আড়ালে এসে আমার কেমন যেন লাগছে অরিন্দম।‘
অরিন্দম ওর ঠোঁট আমার ঠোঁটের সামনে নিয়ে এসে বলল, ‘প্লিস না কর না। এই মুহূর্তটা আমি হারাতে চাই না। জানি হয়তো আর কোনদিন আমার সাথে তোমার দেখা হবে না, কিন্তু এই মুহূর্তটাকে সম্বল করে আমি বাঁচবো অনেকদিন।‘ ওর ঠোঁট এগিয়ে এলো আমার ঠোঁটের দিকে। আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছি আমার ঠোঁট কাঁপছে। কিন্তু আমার সারা শরীরে একমন একটা নেশা ছড়িয়ে পরেছে। অরিন্দমের নেশা। ওকে কাছে পাবার নেশা। অরিন্দমের ঠোঁট আমার ঠোঁট স্পর্শ করলো। আমার সারা শরীর কেমন আলগা মনে হতে লাগলো। মনে হতে লাগলো অরিন্দম ছেড়ে দিলেই আমি পরে যাবো। ভয়ে আমি ওকে আবার জড়িয়ে ধরলাম ওর পিঠে বেড় দিয়ে দুহাত দিয়ে।
অরিন্দমের ঠোঁট আমার ঠোঁট দুটো গ্রাস করলো। একেই কি চুম্বন বলে? ওর হাত আমার মাথার পিছনে গিয়ে ওর ঠোঁটে আমার ঠোঁট চেপে ধরে আমার উপরের ঠোঁট ওর ঠোঁটের মধ্যে নিয়ে চুষতে লাগলো। আমার সারা দেহ কেমন পাগলের মত হতে শুরু করলো। কি একটা উত্তেজনা আমার সারা শরীরে পোকার মত কিলবিল করে যাচ্ছে। ওর জিভ আমার মুখের ভিতর ঢুকতেই আমি আর থাকতে পারলাম না। আমার জিভ দিয়ে ওর জিভের সাথে কাটাকুটি খেলতে লাগলাম। দু ঠোঁটের মধ্যে নিয়ে ওর জিভ চুষতে লাগলাম। আমার চারিপাশ তখন এক অজ্ঞান অন্ধকার। আমি কি করছি আমার খেয়াল নেই। কিন্তু বুঝতে পারছি অরিন্দমের হাত আমার পিঠে খেলে বেড়াচ্ছে। একবার উপরে একবার নিচে।
আমার দুপায়ের মাঝে কেমন একটা অস্বস্তি। আমি প্রানপনে থাইয়ের সাথে থাই চেপে ধরতে বুঝলাম আমি ভিজে এসেছি। আমার হাত চলে গেল অরিন্দমের মাথার পিছনে। ওকে টেনে আরও জোর করে ধরে রাখলাম আমার ঠোঁটের সাথে। ওর মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে আমার জিভ দিয়ে খুঁজতে লাগলাম ওর অতলান্ত। অরিন্দম আমার জিভ নিয়ে খেলতে লাগলো, দাঁতে করে চেপে ধরে রাখল আমার জিভ।
ও আমাকে দেখেই জড়িয়ে ধরে বলল, ‘উফ পায়েল তোকে দেখে আমি যে কি খুশি হয়েছি। আমি বিশ্বাসই করতে পারি নি তুই এতো তাড়াতাড়ি চলে আসবি। জানিস তো সবাই কাজে ব্যস্ত, দুদণ্ড যে কারো সাথে মন খুলে কথা বলবো, কেউ নেই। চল চল আমার ঘরে চল। কি কি বিয়ের জন্য কিনেছে মা বাবা দেখাবো সব।‘
মা আর বাবা যথারীতি কাজে লেগে গেলেন। আত্মীয়দের মধ্যে এই একটা বাড়ী যেখানে আমরা নিজেদের মত চলতে পারি। ওখানে এটা করিস না ওটা করিস না বলবার কেউ নেই।
আমি রিনির সাথে যেতে যেতে বললাম, ‘এতো তাড়াতাড়ি বলছিস? কলেজে বাবাকে যে কি মিথ্যে বলতে হয়েছে এর জন্য সে আমি জানি। বাবা যখন প্রিন্সিপালের সাথে কথা বলছিলেন বাবার মিথ্যে বলা দেখে আমি তো অবাক। কি সুন্দরভাবে কোন বহিঃপ্রকাশ না রেখেই বাবা অনর্গল মিথ্যে কথা বলে গেলেন। ছুটি মিলে যাবার পর যখন কলেজের বাইরে বেড়িয়ে এলাম বাবাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম তুমি ওনার সামনে কি সুন্দরভাবে মিথ্যে কথাগুলো বলে গেলে। ওয়াহ। বাবা কি বলেছিলেন জানিস, বলেছিলেন আমার রিনির বিয়ে আর আমি মিথ্যে বলবো না ওর জন্য। যত পাপই হোক না কেন।‘
রিনি আমার হাত ধরে ওর ঘরের দিকে নিয়ে যেতে যেতে বলল, ‘আরে মেসোর কথাই আলাদা। আমার মন বলছিল মেসো আর মাসি ঠিক অনেক আগেই এসে পরবে। মন যে ভুল বলে নি তোরা তার প্রমান।‘
দিদির ঘরে ঢুকলাম। ঘর মানে এখন এটা দিদির জন্য রাখা হয়েছে। নাহলে এমনিতে ফাঁকাই পরা থাকে। শুধু এটা কেন বাকি ঘরও ফাঁকাই থাকে। কেউ থাকে না এখানে শুধু একটা কেয়ারটেকার ছাড়া। মেসোর ইচ্ছে নেই এটা বিক্রি করার, কারন মেসো মাঝে মাঝে এসে সবাইকে নিয়ে ছুটি কাটিয়ে যান। আমাদেরও অনেকবার বলেছিলেন মেসো গিয়ে যেন কাটিয়ে আসি। বাবা বা মা কেন যান নি তা জানি না।
আমি রিনির ঘরে ঢুকতে ঢুকতে বললাম, ‘আরে আমি যে চলে এলাম বাবা মা কোথায় রয়ে গেলেন? দেখলাম না তো ওনাদেরকে।‘
রিনি আমাকে ঘরে ঢুকিয়ে বলল, ‘তোকে এখন আর বাবা মার কথা চিন্তা করতে হবে না। তুই এসেছিস তুই এখন আমার সম্পত্তি। তোকে দেখভাল করার ব্যাপার আমার। তুই এখন পায়ের উপর পা তুলে বস।‘
আমি বিছানায় বসতে বসতে বললাম, ‘তুই আমাকে এখন দেখভাল করবি? ভাট। তোকে তো আমাকে দেখতে হবে। আর দুদিন পরে বিয়ে। ও বলে কিনা আমার দেখভাল করবে।‘
দুজনে হাসছি নিজেদের কথায়। রিনি বলল, ‘দাঁড়া তোকে দেখাই কি কি কেনা হয়েছে আমার বিয়ের জন্য। গয়নাগুলো পরে দেখিস, এখানে রাখেন নি মা। লকারে আছে। বিকেলে দেখলেই হবে। এখন শাড়ি, ব্লাউস এইগুলো দেখ।‘ বলে রিনি আলমারি খুলে সব বার করে আনল একেক করে। সে কত ধরনের শাড়ি, বাপরে বাপ। একেকটার দামী মনে হয় অনেক হবে। বেনারসি, বালুচুরি, জামদানী, সম্বলপুরী কটকি সিল্ক কি নেই। একেকটা করে শাড়ীর ভাঁজ ভাঙছে আর নিজের গায়ে মেলে দেখাচ্ছে আমাকে। বলছে, ‘এই দেখ কেমন লাগছে বলতো?’
আমার তো আবার ওই শাড়ি মারি পরার অভ্যেস নেই আর খুব একটা পরিও না। যা পরি গোটা কতক সিল্কের শাড়ি আছে তাই। আর খুব একটা নেশাও নেই আমার শাড়ীর প্রতি। কি যে ওতবড় একটা কাপরকে কায়দা করে পরতে হয়, পরার সময় এমন এলার্জি লাগে যে কি বলবো। কিন্তু রিনিকে তো আর এইসব বলা যাবে না। ভাববে আমার নাক উঁচু। তাই খুব একটা না বুঝলেও মাথা নাড়াতে লাগলাম ভালো ভালো বলে।
সব কিছু দেখানোর পর চটি দেখলাম। এটা আমার পছন্দের। খুব ভালো লাগছিল রিনির ফর্সা পায়ে। আবার পায়ের পাতায় আলতা লাগিয়েছে। দারুন খোলতাই হয়েছে দেখতে। আনন্দে বললাম, ‘দিদি কি দারুন লাগছে তোর পাটা। জামাইবাবু তো একদম চেটে পুটে খাবে তোর পা।‘
রিনি আবার সব গুছিয়ে আলমারিতে তুলতে তুলতে বলল, ‘আমার পা চেটে খাবে কেন? আমার দু পায়ের মাঝখানটা কি করতে আছে?’
আমি লজ্জা পেলাম ওর সোজাসুজি এই কথায়। আমি মাথা নিচু করে বললাম, ‘যাহ্*, তোর লজ্জা করলো না এইভাবে বলতে?’
রিনি কাছে এসে আমার গাল টিপে বলল, ‘ও বাবা কি লজ্জা আমার নেকুর। যেন কোনদিন চাটাবে না ওর বরকে দিয়ে। তখন দেখব কি করিস আর কত লজ্জা পাস। ও হ্যাঁ, লোমগুলো কেটেছিস?’
সেই এক কথা রিনির। আমি বললাম, ‘আরে তোকে তো বলেছি যেদিন ভালো লাগবে না সেদিন কেটে দেবো। এখন কেন চিন্তা করছিস?’
রিনি সব গুছিয়ে চাবি দিয়ে আলমারি বন্ধ করে বিছানায় বসে বলল, ‘তোর আর কি? কেউ আবার ওই জঙ্গলে হাত দেবে তার জন্যই তো তুই কাটছিস না। সত্যি কিনা বল?’
আমি বললাম, ‘যাতো, আমি জানি না।‘
[post_ads]
রিনি ফিসফিস করে বলল, ‘তুই আর আমি তো এইঘরে থাকবো, বল তো আমি শেভ করে দিতে পারি। আমার কাছে ইলেকট্রিক রেজার আছে। করবি?’
আমি আপত্তি জানিয়ে বললাম, ‘কোন দরকার নেই। তোর বিয়ে তার চিন্তা কর এখন।‘
আমরা গল্প করতে লাগলাম। এই করে একদিন বিয়ের দিন এসে গেল। সকালবেলা থেকে তোড়জোড় শুরু বিয়ের। দিদি উপোষ করে আছে। শ্বশুরবাড়ি থেকে গায়ে হলুদ আসবে, তত্ত্ব আসবে। আমরা সময় গুনছি কখন আসবে ওইসব। আমি এখন দিদির কাছে নেই। ঘর সাজাচ্ছি, দিদির শ্বশুরবাড়ি থেকে লোকেরা আসবে, তারা থাকবে কোথায়, বসবে কোথায় আমরা সব এইগুলো নিয়ে ব্যস্ত।
একবার ছুটে দিদির কাছে গেলাম। দিদি একটা তাঁতের শাড়ি পরে বসে আছে, গায়ে লাল ব্লাউস। মুখটা উপোষ করার জন্য কেমন যেন শুকিয়ে আছে। দিদি আমাকে দেখে একটু হাসল, বলল, ‘তোরা সব কোথায় রে? সব দেখছি কাজে ভিড়ে আছিস। আমার সাথে কেউ তো একটু কথা বলবে?’
আমি হেসে উত্তর দিলাম, ‘আরে তোর সাথে সারা জীবন যেন কেউ কথা বলে তার জন্যই তো এতো ব্যস্ততা। তুই কি ভাবছিস আমরা সব মজা করছি?’
রিনি মুখ ঝামটা দিয়ে বলল, ‘রাখ তো তোদের ব্যস্ততা। সব জানি। আমাকে ফাঁকি দেবার জন্য তোরা আসছিস না।‘
আমি আরও একটু মজা করলাম, ‘তুই বলতো তোকে একা রেখেছি কেন আমরা?’
রিনি জিজ্ঞেস করলো, ‘কেন?’
আমি বললাম, ‘রাতে বরের সাথে কি কি করবি সেইগুলো একা বসে ভাবতে।‘ বলে আমি দৌড়ে আবার বাইরে চলে গেলাম।
রিনি ডাকতে থাকল, ‘পায়েল, পায়েল। দাঁড়া তোর মজা দেখাচ্ছি।‘
কিন্তু আমাকে আর পায় কে। আমি তো দৌড়ে বেড়িয়ে গেছি। যেতে যেতে শুনলাম উলু ধ্বনি। তারমানে তত্ত্ব এসে গেছে। আমি আবার দৌড়ে রিনির কাছে ফিরে এলাম, বললাম, ‘শোন, তত্ত্ব বোধহয় এসে গেছে। তুই একা বসে থাক আমি দেখে আসছি কি কি এলো। গায়ে হলুদ দিতে হবে না?’
আবার চলে গেলাম বাইরে। রিনির গলা শুনতে পেলাম, ‘ও আসবি না তো? দেখবি তোর বিয়েতে আমি কি করি।‘
আমি হাসতে হাসতে গায়ে হলুদের তত্ত্বের জন্য চলে গেলাম। এখন চিৎকার করছে বিয়েতে সব ঠিক হয়ে যাবে। সব ভিড় করে দাঁড়িয়ে আছে। কেউ উলু দিচ্ছে, কেউ বা শাঁখ বাজাচ্ছে। চিৎকার চেঁচামেচি চারিদিকে। উঁকি মেরে দেখলাম কে কে এসেছে। মাকে দেখালাম হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছেন। মায়ের কাছে যেতেই মা বললেন, ‘কিরে কোথায় ছিলি? সারাক্ষন দেখা নেই তোর।‘
আমি বললাম, ‘আরে আমি তো দিদির কাছে আছি তখন থেকে। ছাড়ে কি আর?’
মা বললেন, ‘হুম। এগুলো সব রাখতে হবে না? নে নে সব হাতে হাতে নে।‘
দেখি এক সুন্দরী ভদ্রমহিলা দাঁড়িয়ে আছেন হাতে তত্ত্বের থালা নিয়ে। আমি হাত বাড়িয়ে থালাটা নিতে যেতেই মহিলাটি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালেন। মাসি এটা লক্ষ্য করে বললেন, ‘আরে এ হচ্ছে পায়েল, রিনির মাসির মেয়ে। রিনির গলার বন্ধু। এ ছাড়া ওর আর কোন বন্ধু নেই।‘
মহিলাটি আমার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হাসলেন। দারুন হাসি ওনার। উনি বললেন, ‘আর আমি কে জানো? আমি হচ্ছি তোমার দিদির ননদ, উনি হচ্ছেন ননদাই।‘ যে ভদ্রলোকের দিকে দেখালেন সেই লোকটিও খুব অমায়িক। সবার সাথে হেসে কথা বলছেন। আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘তুমি খুব সুন্দর দেখতে কিন্তু।‘
আমি চাপা স্বরে বললাম, ‘থ্যাঙ্ক ইউ।‘
দিদির ভাবি ননদ আমাকে আরেকটা ছেলের দিকে ইশারা করে বললেন, ‘আর ও হচ্ছে অরিন্দম। তোমার দিদির এক দূর সম্পর্কের দেওর। এই নাও এইগুলো ধরো।‘
আমি থালা নিতে নিতে লক্ষ্য করলাম অরিন্দম মানে দিদির ভাবি দেওর আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে মুখে হাসি এনে। আমি হাসি ফেরত দিয়ে থালা নিয়ে আর সবাই যে দিকে যাচ্ছে সেইদিকে চলে গেলাম। ছেলেটার হাসি মাখা মুখ চোখের সামনে ভেসে রইল। ঘরের ভিতর এসে মনে হোল ছেলেটা বেশ স্মার্ট। গায়ে একটা শেরওয়ানী পরা, চুলগুলো উল্টো করে আঁচড়ানো, ঠোঁটের উপর সুন্দর সরু একটা গোঁফ, মুখের শ্রী বৃদ্ধি করেছে যেটা। চোখগুলো যেন কথা বলছে। মনের মধ্যে লেগে রইল ছেলেটা।
বিয়ের সময় ছেলেটাকে আবার ভালো করে দেখলাম। দেখলাম মানে হঠাৎ করে ও সামনে এসে গেল। আমি সেজেগুজে এধার ওধার দৌড়াদৌড়ি করছি। দেখি সামনে ও। এবারে ভালো করে নজর দিলাম। পেটানো চেহারা, দেখেই মনে হয় রেগুলার ব্যায়াম করে। ফর্সা গায়ের রঙ। নাকটা আগে দেখি নি। এখন দেখলাম। টিকালো নাক। মুখের সাথে দারুন মানিয়েছে।
সামনা সামনি পরে যাওয়াতে বাধ্য হয়েই বললাম, ‘কি হোল একা দাঁড়িয়ে? চা বা কফি কিছু নিয়েছেন?’
অরিন্দম ঠোঁট উল্টে জবাব দিলো, ‘ছেলের বাড়ীর থেকে এসেছি। কেউ কি আর পাত্তা দেয়? নাহ্*, জোটে নি ভাগ্যে।‘
আমি কৃত্রিমতা গলায় ফুটিয়ে বললাম, ‘ওমা সেকি কথা। তাই জন্য মুখ এতো শুকনো লাগছে। চলুন দেখি কোথায় পাওয়া যায় কফি। ছেলের বাড়ীর লোক বলে কথা। আবার কি না কি বদনাম দিয়ে দেবেন।‘
অরিন্দম আমার সাথে যেতে যেতে বলল, ‘সেতো দেবই। বদনাম কি আর করবো না?’
আমি অবাক হবার ভান করে বললাম, ‘বাহরে, এইযে কফি খাওয়াতে নিয়ে যাচ্ছি যে?’
ও হেসে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘শুধু কফি খাওয়ালে চলবে? এই যে তখন থেকে একলা একলা ঘুরছি কেউ নেই একটু গল্প করার মত। আর কাঁহাতক একলা একলা ঘোরা যায়?’
আমার মনে হোল অরিন্দম ঠিক কথা বলেছে। আমিও তো ফালতু ঘুরে বেড়াচ্ছি। তার থেকে ওর সাথেই কথা বলে সময় কাটাই না কেন। দিদিকে পার্লার থেকে এসে সাজাচ্ছে। জানি না কতক্ষনে শেষ হবে শৃঙ্গার পর্ব। তারথেকে এই ভালো। ওর সাথে কিছু সময় কাটানো যাবে।
আমি ওর দিকে তাকিয়ে রীতিমতো চোখে যৌনতা এনে বললাম, ‘যদি আমার সাথে কথা বললে ভালো লাগে তো আমি এখন ফ্রি।‘
এ কথায় ও কথায় ওর সবকিছু জেনে নিলাম। অরিন্দম এরোনোটিক ইঞ্জিনিয়ার। বাড়ীর এক ছেলে। রিনির বরের অনেক দূর সম্পর্কের আত্মীয়। ছুটিতে এসেছিল। কিন্তু কল আসাতে ছুটি তাড়াতাড়ি কান্সেল করে কালই সকালে চলে যাবে। বাগডোগরা থেকে ফ্লাইট ধরে দিল্লী। অরিন্দমের হাইট প্রায় ৬ ফিট। পাইলট একেই মানায়।
[post_ads_2]
আমরা বেশ কিছুক্ষন ধরে গল্প করছি এমন সময় মাসি এসে ডাক দিলেন, ‘এই পায়েল, তুই কোথায়? তোকে রিনি ডাকছে।‘
আমি ফিসফিস করে বললাম, ‘আপনি এখন একটু একা ঘুরুন। আমি আসছি।‘
অরিন্দম দুম করে আমার হাত ধরে বলল, ‘আসবেন তো?’
আমি আস্তে করে আমার হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে বললাম, ‘শিওর। আপনি থাকবেন তো?’
অরিন্দম হাতটা তুলে বাই করার মত বলল, ‘এখন আমার এইখানে আপনি ছাড়া আর কে পরিচিত আছে। আমি আছি এইখানে।‘
আমি এগিয়ে গেলাম। হারিয়ে যাবার আগে পিছন ফিরে দেখলাম ও এক দৃষ্টিতে আমার যাবার পথের দিকে চেয়ে রয়েছে। কষ্ট হচ্ছিল আমার ওকে একা ছেড়ে আসার।
দিদির কাছে এসে দেখলাম দিদি তৈরি। এতো সুন্দর রিনিদিদিকে আগে কখনো দেখি নি। আমি হা করে তাকিয়ে রইলাম। রিনির আমার দিকে চোখ পরাতে হেসে বলল, ‘কিরে জাম্বুবানের মত হা করে কি দেখছিস? কোনদিন দেখিস নি নাকি?’
আমি হা মুখেই বললাম, ‘দেখেছি তো আগে। কিন্তু এতো সুন্দর তোকে আগে কখনো দেখি নি। কি দারুন তোকে দেখতে লাগছে তুই জানিস না দিদি।‘
দিদি আমার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘তবু তোর ওই চাঁদপনা মুখটার থেকে ভালো নয়।‘
আমি দিদির গলা জড়িয়ে বললাম, ‘তুই আবার একটু বেশি বাড়িয়ে বলছিস। দারুন লাগছে কিন্তু তোকে।‘
রিনি জিজ্ঞেস করলো, ‘কোথায় ছিলি বলতো? অনেকক্ষণ দেখা নেই তোর?’
আমি অরিন্দমের কথা চেপে গিয়ে বললাম, ‘এইতো প্যান্ডেলে দেখভাল করছিলাম। ভালোই সাজিয়েছে প্যান্ডেলটা।‘
রিনি বলল, ‘ইসস, আমার দেখা হোল না।‘
আমি দিদিকে ছেড়ে দিয়ে বললাম, ‘দেখবি দেখবি, পালাচ্ছে না বাবা প্যান্ডেলটা।‘
বিয়ের পর খেতে যখন বসেছি তখন দেখি আমার উল্টো দিকে আমার সামনে অরিন্দম বসে আছে। আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে,। ইচ্ছে হচ্ছিল ও আমার পাশে এসে বসুক। কিন্তু সবার সামনে তো আর সেটা বলা যায় না। মাঝে একটু কথা হয়েছে ঠিকই কিন্তু আমি বেশি সময় দিদির কাছে ছিলাম। ওত ওর দিকে নজর দেওয়া হয় নি। খেতে খেতেই আমাদের চোখে চোখে অনেক কথা হোল। ও হাসে আমিও হাসি। আবার চারিপাশ দেখে নিই কেউ দেখছে কিনা।
একসাথে এসে সবাই বসলাম একটা ঘরে। গান বাজনার আসর বসেছে। যে যার মত গান গাইছে। কেউ সুরে কেউ বা বেসুরে। অরিন্দমকে সবাই ধরল গান করতে। ও তো কিছুতেই গান করবে না। আমার দিকে চোখ পরাতে আমি চোখে ইশারা করলাম গান করতে। অরিন্দম গলা ঝেরে গান ধরল মান্না দের গান ‘দীপ ছিল শিখা ছিল’। খুব ভালো গলা ওর। গানটা শেশ হতেই আমার হাতে আমারই অজান্তে তালি বেজে উঠলো। মনে পরতে আমি মুখ নিচু করে দিলাম,
ইসস কি লজ্জা। সবাই কি ভাবছে কে জানে।
একটা সময় আমার হাঁটুতে একটা হাতের ছোঁওয়া পেয়ে দেখলাম অরিন্দম পাশে এসে বসেছে আর ওর একটা হাত আমার হাঁটুর উপর। ভালো লাগছিল ওর স্পর্শ। অন্যদিকে তাকিয়ে দেখলাম কেউ ব্যাপারটা লক্ষ্য করছে কিনা। যে যার নিজেদের নিয়ে মত্ত তখন। গান শেষ। চুটকির আসর বসেছে। শ্লীল, অশ্লীল সব ধরনের চুটকি বলা হচ্ছে। মেয়েরা খুব বেশি। আমার কান, গাল সব লাল হয়ে উঠেছে। শুনে নয়। অরিন্দম পাশে বসে আছে তাই।
একসময় অরিন্দম বলল, ‘আপনি বলবেন না?’
আমি এক আঙ্গুলে শাড়ীর আঁচল জড়াতে জড়াতে বললাম, ‘ধ্যাত অসভ্য।‘
অরিন্দম হা হা করে হেসে উঠলো। কি সুন্দর ওর হাসি। একসময় অশান্ত পরিবেশ শান্ত হয়ে আস্তে লাগলো যত রাত বাড়তে লাগলো। দেখলাম গুটি গুটি একেক জন করে সবাই শুয়ে পরেছে। আমি অরিন্দমকে বললাম, ‘আপনি একটু ঘুমিয়ে নিন। সকালে তো আবার বেড়তে হবে।‘
অরিন্দম আমার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘না বাবা, সকালে যদি উঠতে না পারি?’
আমি ওর চোখে চোখ রেখে বললাম, ‘আমি তো আছি। আমি উঠিয়ে দেবো। আপনি নিশ্চিন্তে ঘুমান।‘
অরিন্দম জবাব দিল, ‘আমি কি পাষণ্ড নাকি? আমি ঘুমাব আর আপনি জেগে থাকবেন। তাই হয় নাকি? আমি এক কাজ করছি। আপনি ততক্ষন একটু গড়িয়ে
নিন, আমি ছাদের থেকে একটা সিগারেট খেয়ে আসি।‘
আমি বললাম, ‘ধুর, আমারও ঘুম আসছে না। চলুন। আমিও যাই আপনার সাথে। আপনার সিগারেট খাওয়াও হবে, আমার সময় কাটানোও হবে।‘
অরিন্দম উঠতে উঠতে বলল, ‘সেই ভাল, চলুন যাওয়া যাক।‘
সকলের ঘুমের চোখকে ফাঁকি দিয়ে আমরা বেড়িয়ে এলাম ঘর থেকে, পা টিপে টিপে ছাদে চলে গেলাম।
মাসিদের ছাদ পেল্লায় বড়। সামনে প্যান্ডেলের লাইটগুলো জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। আমাদের এই ছাদেও ওর রেশ এসে পরেছে। দুজনে পাশাপাশি হাঁটতে লাগলাম। অরিন্দম হাঁটতে হাঁটতে বলল, ‘বেশ লাগছে না? ছাদটা কিন্তু খুব বড়। আপনার মাসিরা খুব বড়োলোক না?’
আমি সেভাবে তো আর বলতে পারবো না তবে রিনিদিদিদের লাইফ স্টাইল বেশ জাঁকজমকের। মেসো ভালো জায়গায় চাকরি করে, ভালো হবে নাতো কি? আমি শুধু আওয়াজ করলাম, ‘হুম।‘
হাঁটতে হাঁটতে একদম একধারের কিনারায় চলে এলাম। নিচে ঝুঁকে দেখলাম। এইদিকটা বাড়ীর সামনের দিক। গেটের আলো তখনো জ্বলে আছে। অরিন্দমের দিকে তির্যক দৃষ্টি দিয়ে দেখলাম। নিচের থেকে লাইট পরে ওর মুখে কেমন একটা আলো আঁধারী ভাব এনেছে। ভালোই লাগছে। তাহলে আমার মুখটাও তাই লাগছে। কে জানে ভালো লাগছে না খারাপ। তবে এখানে দাঁড়ালে চোখে বড় লাইট পড়ছে। বললাম, ‘চলুন, ওইদিকে যাই। এখানে বড় আলো।‘
অরিন্দম হেসে উঠলো, বলল, ‘কেন অন্ধকারকে খুব ভালবাসেন নাকি?’
আমি হাঁটতে শুরু করলাম ওকে ছাড়াই। আস্তে আস্তে বটে। বললাম, ‘তা কেন? অন্ধকারকে সবাই ভয় পায়। শুধু আমি না। এখানে আলোটা খুব চোখে লাগছেবলে চলে এলাম। আপনার যদি ভালো লাগে তাহলে দাঁড়ান না।‘
পিছন থেকে ফোঁস করে একটা আওয়াজ এলো। একটু ভয়েই পিছন ফিরে দেখালাম ও একটা দেশলাই জ্বেলেছে সিগারেট ধরাবে বলে। দেখতে থাকলাম, বেশ স্টাইলে সিগারেটটা ধরালো। তারপর একমুখ ধোঁওয়া ছেড়ে বলল, ‘যদি আলাদাই থাকতে হবে তাহলে দুজনে মিলে এলাম কেন ওপরে?’
আমি অন্ধকারের দিকে চলে গিয়ে ছাদের কার্নিশে পিছন ঠ্যাসান দিয়ে বললাম, ‘আপনাকে চালাক ভেবেছিলাম, কিন্তু আপনি তো একটা বোকা দেখছি। আমি চলে এলাম লাইটের জন্য। আর আপনার লাইট ভালো লাগে। তাহলে আলাদা হবো নাতো কি?’
অরিন্দম এসে পাশে গা ঘেঁসে দাঁড়ালো, বলল, ‘আচ্ছা আমি বোকা বোঝা গেল তাহলে। বেশ বুদ্ধি তো আপনার। অথচ একটুও গর্ব নেই আপনার মধ্যে।‘
ওর বলার ধরন দেখে আমি হেসে ফেললাম। ও আমার হাসি দেখে বলল, ‘হাসি নয়। অ্যাই অ্যাম সিরিয়াস। সত্যি বলছি।‘
আমি বললাম, ‘ঠিক আছে মশাই আমরা এখানে নিশ্চয়ই ঝগড়া করতে আসি নি। আসুন দু চারটে কথা বলা যাক। আমরা তো তাই করতে এসেছি। টাইম পাশ করতে।‘
অরিন্দম দূরে তাকিয়ে বলল, ‘দেখুন পাহারের গায়ে বাতিগুলো। টিপটিপ করে কেমন জ্বলছে। ওই দেখুন আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখুন, অন্ধকার মিশমিশে কালো আকাশে চাঁদ কেমন আলো ছড়িয়ে নিজের রাজত্ব পেতে বসেছে।‘
আমি একটু কৌতুকের গলায় বললাম, ‘এই অন্ধকারে কাব্য বেরোচ্ছে নাকি মন থেকে?’
ততক্ষনে অরিন্দম গুনগুন করে গান শুরু করেছে, “ও চাঁদ সামলে রাখো জ্যোৎস্নাকে, কারো নজর লাগতে পারে……’
গান শেশ হবার পর কিছুক্ষন মনে হোল অরিন্দমের গানের রেশ পাহারের গায়ে প্রতিধ্বনি হচ্ছে। খুব ভালো লাগছিল মুহূর্তটাকে। কিছুক্ষন পর আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘কার নজর লাগবে শুনি?’
অরিন্দম আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল, ‘চাঁদের কার নজর লাগবে জানি না, কিন্তু’ গলাটা প্রায় ফিসফিস করে বলল, ‘আমার নজর লেগে গেছে এক অনন্য সুন্দরীর উপর।‘
আমি জানি ও কি বলতে চাইছে, তবু না বুঝে বললাম, ‘এই অন্ধকারে আবার কোন সুন্দরীকে খুঁজে পেলেন আপনি?’
অরিন্দমের দৃষ্টি আমার কাছ থেকে সরে যায় নি। ও আমার আরও কাছে এসে কাঁধে হাত রেখে বলল, ‘এই সুন্দরীর। এতে আমি বিদ্ধ হয়েছি।‘
আমি কাঁধের থেকে হাত সরিয়ে নেবার জন্য হাত তুলেছি আর বলেছি, ‘আরে বাপরে। আমার মধ্যে আবার সুন্দরের কি দেখলেন শুনি।‘
যেন কিছু ভেঙ্গে পড়লো এমন আওয়াজ কানে এলো। ওমনি চারিদিক ঘুটঘুটে অন্ধকারে ছেয়ে গেল। যেন রাজ্যের ভয় আমার শরীর ঘিরে ধরল। আমি হাত ছাড়িয়ে নেবার বদলে অরিন্দমকে প্রানপনে জড়িয়ে ধরলাম, একদম জাপটে। আমার তখন কোন খেয়াল নেই আমি কি করছি। আমার সারা শরীর থরথর করে কাঁপছে। কি বিকট আওয়াজ! এখনো কানে বাজছে ওই আওয়াজের রেশ। অরিন্দম ওর এক হাত দিয়ে আমার পিঠে বেড় দিয়ে রয়েছে আর আরেক হাত দিয়ে আমার মাথায় আস্তে আস্তে ঠুকে যাচ্ছে।
আমার শরীরের থরথরানি একটু কম হলে আমি আস্তে করে নিজেকে ছাড়িয়ে নিলাম। ওর দিকে তাকাতে আমার লজ্জা করছে। কি ভীতু আমি, কি না কি একটা আওয়াজ হোল ব্যস ওকে জাপটে ধরলাম আমি। এখন কি করি?
[post_ads_2]
অরিন্দম ফিসফিস করে আমার কানে বলল, ‘এখন ভয়টা গেছে?’
আমি অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে বললাম, ‘কি আওয়াজ হোল বলুন তো?’
ও উত্তর দিলো, ‘ছেড়ে দিন। যেটা হয়ে গেছে ওটা নিয়ে ভেবে লাভ নেই। আমি আপনার কাছে একটা কিছু চাইতে পারি? এই বিশেষ মুহূর্তটাকে ভুলে যেতে দিতে মন করছে না যে।‘
আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘কি জিনিস?’
অরিন্দম বলল, ‘আপনার সুন্দর ঠোঁটে একটা চুমু খেতে চাই।‘
আমার কানে যেন কেউ গরম জল ঢেলে দিলো ওর অভিব্যক্তিই ছিল ওই রকম। আমি বলে উঠলাম, ‘এমা তা হয় নাকি?’
অরিন্দম বলল, ‘কেন হয় না পায়েল? এই রাতে শুধু তুমি আর আমি। এই রাতকে সাক্ষি রেখে আমি এখান থেকে অমূল্য কিছু স্মৃতি নিয়ে যেতে চাই যে। আমার মন বলছে তাই।‘
অরিন্দম আমার গালদুটো দুহাতে ধরে আমার মুখ ওর দিকে করে আমার দিকে তাকিয়ে রইল। আমি চোখে চোখ রাখতে গিয়েও পারছি না যে। আমি দুর্বল হয়ে যাচ্ছি, মনে হচ্ছে ওই নজর আমাকে সম্মোহিত করে দিয়েছে। আমি কোনরকমে ওর চোখে চোখ রেখে বললাম, ‘এটা পাপ হবে না?’
অরিন্দম বলল, এই প্রথম অরিন্দম আমাকে তুমি সম্বোধন করলো, ‘তুমি মেনে নিলে কোন পাপ নেই। আর পাপের আমরা করছিটা কি। দুজন দুজনকে চুমু খাওয়া যদি পাপ হয় তাহলে তোমার সাথে এই ধরনের পাপ আমি অনেকবার করতে রাজি আছি।‘
আমিও অরিন্দমকে তুমি বলে ফেললাম জানি না মন কেন সায় দিলো, বললাম, ‘কিন্তু সবার থেকে আড়ালে এসে আমার কেমন যেন লাগছে অরিন্দম।‘
অরিন্দম ওর ঠোঁট আমার ঠোঁটের সামনে নিয়ে এসে বলল, ‘প্লিস না কর না। এই মুহূর্তটা আমি হারাতে চাই না। জানি হয়তো আর কোনদিন আমার সাথে তোমার দেখা হবে না, কিন্তু এই মুহূর্তটাকে সম্বল করে আমি বাঁচবো অনেকদিন।‘ ওর ঠোঁট এগিয়ে এলো আমার ঠোঁটের দিকে। আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছি আমার ঠোঁট কাঁপছে। কিন্তু আমার সারা শরীরে একমন একটা নেশা ছড়িয়ে পরেছে। অরিন্দমের নেশা। ওকে কাছে পাবার নেশা। অরিন্দমের ঠোঁট আমার ঠোঁট স্পর্শ করলো। আমার সারা শরীর কেমন আলগা মনে হতে লাগলো। মনে হতে লাগলো অরিন্দম ছেড়ে দিলেই আমি পরে যাবো। ভয়ে আমি ওকে আবার জড়িয়ে ধরলাম ওর পিঠে বেড় দিয়ে দুহাত দিয়ে।
অরিন্দমের ঠোঁট আমার ঠোঁট দুটো গ্রাস করলো। একেই কি চুম্বন বলে? ওর হাত আমার মাথার পিছনে গিয়ে ওর ঠোঁটে আমার ঠোঁট চেপে ধরে আমার উপরের ঠোঁট ওর ঠোঁটের মধ্যে নিয়ে চুষতে লাগলো। আমার সারা দেহ কেমন পাগলের মত হতে শুরু করলো। কি একটা উত্তেজনা আমার সারা শরীরে পোকার মত কিলবিল করে যাচ্ছে। ওর জিভ আমার মুখের ভিতর ঢুকতেই আমি আর থাকতে পারলাম না। আমার জিভ দিয়ে ওর জিভের সাথে কাটাকুটি খেলতে লাগলাম। দু ঠোঁটের মধ্যে নিয়ে ওর জিভ চুষতে লাগলাম। আমার চারিপাশ তখন এক অজ্ঞান অন্ধকার। আমি কি করছি আমার খেয়াল নেই। কিন্তু বুঝতে পারছি অরিন্দমের হাত আমার পিঠে খেলে বেড়াচ্ছে। একবার উপরে একবার নিচে।
আমার দুপায়ের মাঝে কেমন একটা অস্বস্তি। আমি প্রানপনে থাইয়ের সাথে থাই চেপে ধরতে বুঝলাম আমি ভিজে এসেছি। আমার হাত চলে গেল অরিন্দমের মাথার পিছনে। ওকে টেনে আরও জোর করে ধরে রাখলাম আমার ঠোঁটের সাথে। ওর মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে আমার জিভ দিয়ে খুঁজতে লাগলাম ওর অতলান্ত। অরিন্দম আমার জিভ নিয়ে খেলতে লাগলো, দাঁতে করে চেপে ধরে রাখল আমার জিভ।
COMMENTS